Latest Notes

Assertive Sentence Narration Change Worksheet (Direct Speech to Indirect Speech) The Greenhouse Effect – Carl Dennis | Class 12 Sonnet no. 73 That time of year thou mayst in me behold | Class 12 Hawk Roosting – Ted Hughes | Class 12 Down The Rabbit-Hole – Lewis Carrol | Class 12 Tara- Mahesh Dattani | Class 12 Our Casuarina Tree – Toru Dutt | Class 12 From A Room of One’s Own [SHAKESPEARE’S SISTER] – Virginia Woolf | Class 12 The Night Train at Deoli – Ruskin Bond (বঙ্গানুবাদ) | Class 12 Amarnath-Sister Nivedita MCQs and Answers | Class 11

ত্রিপুরা রাজ্যে উত্তর হইতে দক্ষিণদিক ব্যাপিয়া যে সমুদয় সুদীর্ঘ পর্বতমালা সমসূত্রে অবস্থিত, তন্মধ্যের পশ্চিমদিকস্থ ন্যূনকল্পে ৭৫ মাইল দীর্ঘ গিরিশ্রেণি ‘বড়মুড়া’ নামে প্রসিদ্ধ। ওম্পিছড়া নামক যে একটি ক্ষীণকায়া স্রোতস্বতী উত্তর হইতে দক্ষিণাভিমুখে আগত হইয়া ত্রিপুরার দক্ষিণ দিকে প্রবাহিত গোমতী নদীর সহিত বড়মুড়া পর্বতমালার পূর্বদিকে সম্মিলিত হইয়াছে, তাহার নিকটবর্তী উক্ত পর্বতের ক্রমনিম্ন গাত্রে শ্রেণিবদ্ধভাবে খোদিত কতিপয় দেবমূর্তি দৃষ্টিগোচর হয়। এতদ্ব্যতিরেকে তৎসমুদয় মূর্তির ঊর্ধ্বভাগে গভীর অরণ্যে প্রচ্ছাদিত পর্বত-গাত্রে একটি মহিষমর্দিনী দুর্গার প্রতিমূর্তি খোদিত আছে।

কোন্ সময়ে কাহার দ্বারা উক্ত মূর্তিনিচয় এবংবিধ জনমানবহীন অরণ্যসংকুল প্রদেশে খোদিত হইয়াছিল, ইহা জ্ঞাত হওয়া যায় না; এবং এই কৌতূহল উদ্দীপক বিষয় কখনও জনসমাজে উদ্ঘাটিত হইবে কি না ইহাও বলা দুষ্কর।

সম্ভবত কোনো ঘটনা বিশেষের স্মৃতিচিহ্ন স্বরূপ কিংবা বৌদ্ধধর্মের অবনতি-কালে হিন্দুধর্মের বহুল প্রচার উদ্দেশ্যে, বৌদ্ধধর্মাবলম্বী লোক-পূর্ণ প্রদেশের সমীপবর্তী এই স্থানে উল্লিখিত হিন্দুদেবমূর্তিনিচয় বর্তমান ত্রিপুরেশগণের পূর্বপুরুষ কোনো মহীপাল-কর্তৃক খোদিত হইয়া থাকিবে।

সুপ্রাচীন কালে চন্দ্রবংশসম্ভূত হিন্দু নৃপাল ‘যুঝারফা’ এতং প্রদেশের বৌদ্ধধর্মাবলম্বী মগ অধিপতিকে যুদ্ধে পরাজিত করিয়া যে হিন্দুরাজ্য প্রতিষ্ঠিত করিয়াছিলেন, তাহারই স্মৃতিচিহ্নস্বরূপ তৎকর্তৃক বর্ণিত মূর্তিনিচয় এই স্থানে খোদিত হইয়া অক্ষয় কীর্তি যে স্থাপিত না হইয়াছিল ইহাই বা কে বলিতে পারে? অদ্যাপি এই স্থানের সন্নিধানে অবস্থিত ‘অমরপুর’ প্রভৃতি প্রাচীন জনপদে বহু সংখ্যক বৌদ্ধধর্মাবলম্বী ‘মগ’ ও ‘চাকমা’ নামক পার্বত্য লোক বাস করিতেছে।

প্রাগুক্ত ‘বড়মুড়া’ নামে খ্যাত পর্বতমালার যে অংশে মূর্তিনিচয় খোদিত আছে, তাহা ‘উদয়পুর’ ও ‘অমরপুর’ নামক ত্রিপুররাজ্যের সুপ্রসিদ্ধ দুইটি প্রাচীন রাজধানীর মধ্যবর্তী সীমান্ত প্রদেশে অবস্থিত। এতদঞ্চলস্থ সর্ব সাধারণ কর্তৃক পর্বতের এই
স্থান ‘দেবতামুড়া’ নামে অভিহিত হয়।

অধুনা ত্রিপুরা দেশের কোনো স্থানেই ভাস্কর-শিল্পী বর্তমান নাই, তজ্জন্য এইরূপ সম্ভাবিত হইতে পারে এতৎপ্রদেশস্থ প্রস্তরমূর্তিনিচয় ‘গয়া’ প্রভৃতি অঞ্চল হইতে সংগৃহীত এবং তদ্রূপ হওয়াও বিচিত্র নহে। কিন্তু একদা এতদঞ্চলেও যে ভাস্করশিল্পী ছিল, তাহা পর্বতগাত্রস্থ মূর্তিনিচয় পর্যবেক্ষণ করিয়া প্রতীয়মান হয়। তবে তাহারা এই দেশনিবাসী কি না ইহা বলা দুরূহ। যদি ভিন্নদেশনিবাসী হইয়া থাকে তাহা হইলে ইহা সম্ভব যে, পূর্বকালে এতৎপ্রদেশস্থ মহীপগণ সময়ে সময়ে। ভাস্করশিল্প-নিপুণ ব্যক্তিগণকে দেশান্তর হইতে স্বীয় রাজ্যে আনয়নপূর্বক প্রতিপালন
করিতেন। সংখ্যার ন্যূনতা বশতই হউক কিংবা অন্য যে-কোনো কারণেই হউক, ইদানীং তাহাদিগের বংশ এতৎপ্রদেশ হইতে সম্পূর্ণরূপে তিরোহিত হইয়াছে এবং সেই সঙ্গে ভাস্করবিদ্যাও বিলুপ্ত হইয়াছে।

পূর্ববর্ণিত দেবতামুড়া পর্বতের সমসূত্রে ১৫ মাইল পূর্বদিকে – সামান্য দক্ষিণ- কোণবর্তী পাষাণময় উচ্চভূমিতে ‘রাইমা’ ও ‘সাইমা’ নামক দুইটি পার্বত্য নদী মিলিত হইয়া একটি নির্ঝররূপে সবেগে নিম্নে পতিত হইতেছে। ইহাই ডম্বুর নামে প্রসিদ্ধ, ‘গোমতী’ নদীর উৎপত্তি স্থান। এই বারিধারা ত্রিপুরারাজ্য মধ্যে একটি সুবিখ্যাত জলপ্রপাত বলিয়া পরিগণিত।

এতদঞ্জল নিবাসী মগ, চাকমা ও রিয়াং প্রভৃতি অশিক্ষিত পার্বত্য জাতীয় লোকেরা উক্ত ঝরনাকে দেবতাবিশেষ মনে করে এবং এতৎকারণবশত তাহারা প্রায়শ এই অরণ্য সংকুল পর্বতময় স্থানে আগমন করিয়া ছাগ, মহিষ প্রভৃতি বলিদান- পূর্বক বর্ণিত জলপ্রপাতের পূজা করিয়া যায়।

অত্রস্থ একটি পর্বত-শিখরে পূর্বে এক সুদৃঢ় দুর্গ অবস্থিত ছিল বলিয়া কথিত আছে। অধুনা তাহার কোনো চিহ্নও বর্তমান নাই। এই স্থান ও উদয়পুরে গমনাগমন করিবার জন্য যে এক রাজপথ ছিল অদ্যাপি তাহার চিহ্ন পরিলক্ষিত হয়। জনসাধারণ ইহাকে ‘ডম্বুরের জাঙাল’ নামে অভিহিত করে।

আরও পড়ুন –
অন্নপূর্ণা ও ঈশ্বরী পাটনি (কবিতা)- ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর
পরিচয় (কবিতা) – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
হাট (কবিতা) – যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত
এখানে আকাশ নীল (কবিতা) – জীবনানন্দ দাশ
সামান্যই প্রার্থনা (কবিতা) – বিজনকৃষ্ণ চৌধুরী
দস্যু -কবলে (গল্প) – বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
নতুনদা (গল্প) – শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
সিংহের দেশ (গল্প) – বিভূতিভূষন বন্দ্যোপাধ্যায়
দেবতামুড়া ও ডম্বুর (গল্প) – সমরেন্দ্র চন্দ্র দেববর্মা
সুভা (ছোটোগল্প) – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
বেড়া (ছোটোগল্প) – মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়

Spread the love

You cannot copy content of this page